কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট (আপীল) কমিশনারেট ঢাকা - ১

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার


পরিচিতি

রাজস্ব সংক্রান্ত মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানকে রাজস্ব প্রশাসনের কোন সিন্ধান্ত/আদেশের বিরুদ্ধে আপীলের সুযোগ প্রদান করার উদ্দেশ্য সর্বপ্রথম কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট (আপীল) কমিশনারেট, চট্রগ্রাম গঠন করা হয়। পরবর্তীতে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট (আপীল) কমিশনারেট, চট্রগ্রাম এর অধীনে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট (আপীল) কমিশনারেট, আঞ্চলিক কার্যালয়, ঢাকা গঠন করা হয়। শুল্ক ও মূল্য সংযোজন কর প্রশাসনের পূর্নগঠন সংক্রান্ত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বিগত ২০১১ সালে পূর্ববর্তী কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট (আপীল) কমিশনারেটটি ভেংগে, ঢাকা-১, ঢাকা-২, চট্রগ্রাম ও খুলনা নামে চারটি পৃথক কমিশনারেট সৃষ্টি করা হয়।


কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট (আপীল) কমিশনারেট, ঢাকা-১ এর কাজের অধিক্ষেত্রঃ

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের পত্র নথি নং- ১(১২)শুঃভঃপ্রঃ-২/২০০৮(অংশ)৪৫৯, তারিখ- ২০/১২/২০১১ খ্রিঃ তারিখে জারিকৃত আদেশ মোতাবেক কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট (আপীল) কমিশনারেট, ঢাকা-১, ঢাকা এর অধিক্ষেত্র/এলাকা/সীমানা হচ্ছে কাস্টম হাউস আইসিডি, কমলাপুর, ঢাকা; কাস্টম হাউস, পানগাঁও, ঢাকা; কাস্টম বন্ড কমিশনারেট, ঢাকা; কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট, ঢাকা (দক্ষিণ); ঢাকা (পূর্ব); সিলেট ও কুমিল্লা (ফেনী, লক্ষীপুর ও নোয়াখালী জেলা ব্যতীত) এবং পরবর্তীতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের পত্র নথি নং- ১(১২)শুঃভঃপ্রঃ-২/২০০৮(অংশ)/৩১৫(২১), তারিখ- ০৫/০৮/২০১২ খ্রিঃ তারিখে জারীকৃত আদেশ মোতাবেক বৃহৎ করদাতা ইউনিট-মূসক, সেগুনবাগিচা, ঢাকাকে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট (আপীল) কমিশনারেট, ঢাকা-১, ঢাকা এর অধিক্ষেত্রে অন্তর্ভূক্ত করা হয়।


কার্যাবলী:


অর্গানোগ্রামে বর্ণিত কাজের মূল উদ্দেশ্যঃ

(ক) শুল্ক ও ভ্যাট আইনের অধীনের দায়েরকৃত মামলার নিষ্পত্তিকরণ;

(খ) শুল্ক ফাঁকি রোধ কল্পে কাজ পরিচালনা করা ও

(গ) আপীল কমিশনারেট ব্যবহারকারীগণকে প্রয়োজনীয় আইন, বিধিমালা, শুল্কায়ন ও পদ্ধতি বিষয়ে তথ্য সেবা ও সহযোগিতা প্রদান।

(ঘ)    আপীলের উদ্ভবের পটভূমিঃ

(ক) (i) ভ্যাটের আপীলের উদ্ভবঃ মূল্য সংযোজন কর আইন, ১৯৯১- এর ৪২ নং ধারা অনুযায়ী কমিশনার পদমর্যাদার নিম্নের (রাজস্ব কর্মকর্তা; সহকারী কমিশনার, উপ-কমিশনার/বিভাগীয় কর্মকর্তা; যুগ্ম-কমিশনার ও অতিরিক্ত কমিশনার) কোন মূল্য সংযোজন কর কর্মকর্তা কর্তৃক প্রদত্ত কোন সিদ্ধান্ত/আদেশ দ্বারা বিক্ষুব্ধ কোন ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান কমিশনার (আপীল)- এর কাছে আপীল আবেদন দাখিল করবেন।

(ii) আপীল আবেদন দাখিলের সময়সীমাঃ কোন ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান সংক্ষুব্ধ হলে তিনি উক্ত সিদ্ধান্ত বা আদেশ তাকে অবহিত করার তারিখ হতে ০৩ (তিন) মাসের মধ্যে আপীল কমিশনারেটের নিকট আপীল করতে পারবেন।

তবে কমিশনার (আপীল) তাঁর সš‘ষ্টি সাপেক্ষে যথেষ্ট কারণ বিদ্যমান থাকার যুক্তিতে উক্ত ৯০ (নব্বই) দিন মেয়াদের পরবর্তী অতিরিক্ত ৬০ (ষাট) দিনের মধ্যে আপীল দায়েরের অনুমতি দিতে পারবেন। এই সময় অতিক্রান্ত হলে আপীল দায়ের সময় দ্বারা বারিত হবে।

(iii) অর্থ জমা প্রদানঃ কমিশনার (আপীল) এর নিকট দাখিলযোগ্য আপীলের ক্ষেত্রে দাবীকৃত মূসক বা আরোপিত অর্থদন্ডের ১০% (দশ) শতাংশ সরকারী কোষাগারে জমা দেয়ার বিধান রয়েছে।

 (iv) কোর্ট ফি প্রদানঃ কমিশনার (আপীল)- এর নিকট আপীল আবেদন করতে হলে মোট ২১২/- (দুইশত বারো) টাকার কোর্ট ফি দিতে হবে। যেমনঃ আপীল আবেদনে ২০০/- (দুইশত) টাকার

কোর্ট ফি এবং যে আদেশ/দাবীনামার বিরুদ্ধে আপীল আবেদন করা হবে সেই আদেশ/দাবীনামায় ১২/- (বারো) টাকার কোর্ট ফি লাগাতে হবে। 

(খ) (i) কাস্টমসের আপীলের উদ্ভবঃ দি কাস্টমস এ্যাক্ট, ১৯৬৯- এর ১৯৩ নং ধারা অনুযায়ী কমিশনার পদমর্যাদার নিম্নের (রাজস্ব কর্মকর্তা; সহকারী কমিশনার; উপ-কমিশনার; যুগ্ম-কমিশনার ও অতিরিক্ত কমিশনার) কোন কাস্টমস কর্মকর্তা কর্তৃক প্রদত্ত কোন সিদ্ধান্ত/আদেশ দ্বারা বিক্ষুব্ধ কোন ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান কমিশনার (আপীল)- এর কাছে আপীল আবেদন দাখিল করবেন।

 (ii) আপীল আবেদন দাখিলের সময়সীমাঃ কোন ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান সংক্ষুব্ধ হলে তিনি উক্ত সিদ্ধান্ত বা আদেশ তাকে অবহিত করার তারিখ হতে ০৩ (তিন) মাসের মধ্যে আপীল কমিশনারেটের নিকট আপীল করতে পারবেন।

   (iii) অর্থ জমা প্রদানঃ দি কাস্টমস এ্যাক্ট, ১৯৬৯- এর ধারা- ১৯৪ মোতাবেক কমিশনার (আপীল) এর নিকট আপীল মামলা দায়ের করার সময়ে আপীল কর্তৃপক্ষ অনুমতি প্রদান করলে আপীলটি বিবেচনার পূর্বে এই আইনের অধীন আরোপিত কোন শুল্ক বা অর্থদন্ডের সম্পূর্ণ পরিমাণ অথবা উহার ৫০% নগদ জমা প্রদান এবং অবশিষ্ট ৫০% এর পরিমাণ অর্থ পরিশোধের জন্য ব্যাংক গ্যারান্টি দাখিলের নির্দেশ প্রদান করতে পারবেন।

(iv) কোর্ট ফি প্রদানঃ কমিশনার (আপীল)- এর নিকট আপীল আবেদন করতে হলে মোট ২১২/- (দুইশত বারো) টাকার কোর্ট ফি দিতে হবে। যেমনঃ আপীল আবেদনে ২০০/- (দুইশত) টাকার কোর্ট ফি এবং যে আদেশ/দাবীনামার বিরুদ্ধে আপীল আবেদন করা হবে সেই আদেশ/দাবীনামায় ১২/- (বারো) টাকার কোর্ট ফি লাগাতে হবে। 

০২।  আপীল মামলার নিষ্পত্তির জন্য উভয়পক্ষের দফাওয়ারী জবাব গ্রহণ করা হয় এবং জবাবগুলি আইন ও বিধির আলোকে পর্যালোচনা করা হয়। আপীলে উদ্ভবের কারণ ও পটভূমি পর্যালোচনা করে উভয়পক্ষকে শুনানী প্রদান করা হয়। শুনানী প্রদান করে ন্যায়ানুগভাবে আপীলের রায় প্রদানের জন্য প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হবে।

০৩।  শুনানীকালে উভয়পক্ষের মধ্যে সৌহার্দ্যমূলক পরিবেশে একে অপরের সহিত

win-win situation তৈরির মাধ্যমে কর আদায় কার্যক্রম গ্রহণের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

০৪।  আপীলের যাবতীয় কার্যক্রমের মাধ্যমে ভবিষ্যতে যাতে অহেতুক dispute/বিরোধ সৃষ্টি না হয় সেজন্য উভয়পক্ষকে ন্যায়ানুগভাবে সরকারী স্বার্থ সংরক্ষণ এবং ব্যবসা কার্যক্রমকে অহেতুক ঝামেলা থেকে মুক্ত রাখার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পরামর্শ প্রদান করা হবে।

০৫।  আপীল কার্যক্রমের মাধ্যমে ঝুঁকিমুক্ত কর ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করনে আইন ও বিধির আলোকে পর্যবেক্ষণ ও

ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

০৬।  করদাতাগণের মধ্যে ঐচ্ছিক পরিপালন (volantary compliance) বৃদ্ধির জন্য অনুপ্রেরণামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। দ্রæত মামলার সিদ্ধান্ত প্রদানের মাধ্যমে উভয়পক্ষকে কর প্রদান ও কর আদায়ে যথাযথ ভূমিকা রাখার জন্য অনুরোধ করা হবে।

০৭। মূল্য সংযোজন আইন ও শুল্ক আইনের কার্যক্রমে স্ব”ছতার সহিত বাস্তবায়নের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

০৮।  দ্রæত মামলার নিষ্পত্তির জন্য সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। প্রয়োজনে টেলিফোনে সংশ্লিষ্ট মাঠ পর্যায়ের বিজ্ঞ কমিশনারদের সহিত আলোচনা করে বিষয়কার্যে উদ্ভূত সমস্যা যেমন- আপীল আবেদনের উপর দফাওয়ারী জবাব, ট্রেজারী চালানের মাধ্যমে জমাকৃত টাকা/সংযুক্ত চলতি হিসাবের মাধ্যমে জমাকৃত/সমন্বয়কৃত টাকা প্রকৃতপক্ষে সমন্বয় করা হয়েছে কিনা সে বিষয়ে সুস্পষ্ট মন্তব্যসহ মামলা সংশ্লিষ্ট মূলনথি প্রেরণে বিলম্ব ইত্যাদি দূর করা হবে।

০৯।  আপীল কমিশনারেটে সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে নিয়মিত আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে অফিসের পরিবেশও উন্নতকরণ ও সম্মানিত করদাতাদের সেবা প্রদানের লক্ষে যাবতীয় ব্যব¯’া গ্রহণ করা হবে।

১০।     যথাযথভাবে আপীল মামলার নিষ্পত্তির জন্য সংশ্লিষ্ট আইন ও বিধির বিষয়ে অত্র দপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে ইন হাউজ প্রশিক্ষণ চালু থাকবে।

১১।     অফিস শৃংখলা কঠোর পরিপালন করা হবে।

১২।  কোন সম্মানিত করদাতা যাতে কোন প্রকার হয়রানির সম্মুখীন না হয় তা তীক্ষèভাবে পর্যবেক্ষন করা হবে।

১৩।  শুন্য পদ পূরণের ব্যব¯’া নেয়া হবে।

১৪।  APA, BIP & Report Card পদ্ধতি যথাযথভাবে বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা নেয়া হবে।

১৫। ADR অউজ সক্রিয়করণে অত্র দপ্তরের জোরালো ভূমিকা থাকবে।

১৬। আপীল কমিশনারেটে দায়েরকৃত মামলার পর্যালোচনাকরতঃ এর অন্তর্নিহিত কারণ অনুধাবন করে বিভিন্ন কমিশনারেট ও কাস্টম হাউজে সময়ে সময়ে প্রয়োজনীয় সুপারিশমালা প্রেরণের প্রচেষ্টা থাকবে।

১৭। সরকারী রাজস্ব আহরণের বিষয়টি প্রাধান্যসহ ট্রেড ফেসিলিটেশনকে নিশ্চিত করা হবে।

১৮। আপীল মামলার রায় প্রদানকালে ভ্যাট ও শুল্ক ব্যবস্থায় অধিকতর শৃংখলা ও স্ব”ছতা আনয়নের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। 

১৯। আপীল মামলা শুনানীকালে নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়নেও বিভিন্ন দিক আলোচনা করা হবে এবং এর যথাযথ ও সফলভাবে বাস্তবায়নে সহযোগিতা কামনা করা হবে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক গৃহীত সুশাসন ও উন্নততর ব্যবস্থাপনা নীতির আলোকে একটি ব্যবসাবান্ধব, জনবান্ধব ও করদাতা বান্ধব রাজস্ব প্রশাসন তৈরীর পক্ষে করদাতা ও কর কর্মকর্তাদের আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করার জন্য তাঁদের সহযোগিতা কামনাসহ সকলের উদ্দীপ্ত মনোভাব নিয়ে কাজ করার জন্য অনুরোধ করা হবে।

২০। আপীল কমিশনারেটের কার্যক্রমকে আরো গতিশীল ও স্ব”ছভাবে দ্রæত পরিচালনার জন্য অবিরামভাবে (continuous striving) প্রচেষ্টা চালিয়ে নেয়া হবে।